শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৬ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বাইডেনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব : যা বলল হামাস

বাইডেনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব : যা বলল হামাস

স্বদেশ ডেস্ক:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে তিন পর্যায়ের যে প্রস্তাব দিয়েছেন সেটাকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইতিবাচকভাবে দেখছে।

হামাস এক শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার, বাস্তুচ্যুত লোকদের তাদের বাড়িঘরে ফেরা, সত্যিকারের বন্দীবিনিময়ের যেকোনো প্রস্তাবকে ইতিবাচক ও গঠনমূলকভাবে দেখতে প্রস্তুত।’

হামাস জানায়, বাইডেনের স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান হলো ‘আমাদের জনগণের সংগ্রামের কিংবদন্তিতুল্য দৃঢ়তা এবং তাদের সতর্ক প্রতিরোধের ফল।’

হামাসের এই মন্তব্যে সংশ্লিষ্টদের মনে স্বস্তি এনে দিয়েছে। হামাস এত দিন অভিযোগ করে আসছিল যে যুক্তরাষ্ট্র খোলামেলাভাবে ইসরাইলের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধবিরতিতে বাধা দিয়ে আসছে।

যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্ততার কাজে জড়িত এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘হামাস এখন দেখছে যে ভিন্ন মনোভাব নিয়ে আলোচনায় ফেরার জন্য ইসরাইলের ওপর চাপ দেয়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা ইসরাইলকে বার্তা দিচ্ছে যে যুদ্ধবিরতি মেনে না নিলে তারা আমেরিকার সাথে সঙ্ঘাতে জড়ানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারে।’

মার্কিন এক কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সাড়ে চার পৃষ্ঠার। এতে যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো বিস্তারিতভাবে দেয়া আছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, হামাস আগের রাতে প্রস্তাবটি পেয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগবে। তিনি আরো বলেন, হামাস ইতোপূর্বে যেসব দাবি উত্থাপন করেছিল, এতে ছোটখাট কিছু বাদ দিয়ে সবই পূরণ করা হয়েছে।

ইসরাইলের প্রস্তাবিত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব তিনটি ধাপ রয়েছে। ইসরাইল নিজে এই প্রস্তাব ঘোষণা করেনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে এই রূপরেখা তুলে ধরেন। অনেক বিশ্লেষক বলেছেন, এতে নতুন কিছুই নেই। বিভিন্ন পক্ষ থেকে এসব প্রস্তাব অনেকবারই এসেছে। তবে নতুনত্ব যা রয়েছে, তা হলো এটি ঘোষিত হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মুখ দিয়ে।

বাইডেনের ঘোষিত নতুন প্রস্তাবে তিনটি পর্যায় বা ধাপের কথা বলা হয়েছে।

প্রথম পর্যায়টি ছয় সপ্তাহ স্থায়ী হবে। এ সময় যেসব কাজ হবে তার মধ্যে থাকবে : পূর্ণ ও সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি; গাজার সকল জনবহুল এলাকা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর প্রত্যাহার; নারী, বয়স্ক ও আহত পণবন্দীদের মুক্তি এবং ইসরাইলি কারাগার থেকে কয়েক শ’ ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তিলাভ। গাজায় আটক আমেরিকান বন্দীদেরও এ সময় মুক্তি দেয়া হবে।

এছাড়া নিহত কয়েকজন বন্দীর মৃতদেহও তাদের স্বজনদের কাছে ফেরত দেয়া হবে।
ফিলিস্তিনি বেসামরিক লোকজন গাজার সব এলাকায় তাদের বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারবে। উত্তর গাজাতেও তারা ফিরে যেতে পারবে।
প্রতিটি দিনে ৬০০ ট্রাকভর্তি সাহায্য গাজায় প্রবেশ করবে।

যুদ্ধবিরতির ফলে সাহায্য নিরাপদে এবং কার্যকরভাবে অভাবিদের কাছে নিয়ে যাওয়া যাবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায কয়েক লাখ সাময়িক আশ্রয়, হাউজিং ইউনিটসহ প্রদান করবে।

এই ছয় সপ্তাহের বিরতির সময় ইসরাইল ও হামাস দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য আলোচনা করবে। আর তা বৈরিতা স্থায়ীভাবে বন্ধের ব্যবস্থা করবে। তবে আলোচকদের যদি ছয় সপ্তাহের বেশি সময় লাগে, তবে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি এই সময়ের পরও অব্যাহত থাকবে। সকল চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার কাজ করে যাবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে অবশিষ্ট সকল জীবিত পণবন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে। এদের মধ্যে ইসরাইলের পুরুষ সৈন্যরাও থাকবে। ইসরাইলি বাহিনী গাজা থেকে প্রত্যাহার করে নেবে। হামাস যত দিন তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করবে, তত দিন এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি বহাল থাকবে। ফলে এই চুক্তিই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পরিণত হবে, বৈরিতার স্থায়ী অবসান হবে।

তৃতীয় পর্যায়ে গাজায় বড় ধরনের পুনর্গঠন হবে। এই পর্যায়ে পণবন্দীদের মধ্যে যারা মারা গেছে, তাদের কারো মৃতদেহ গাজায় থেকে থাকলে তা ফেরত দেয়া হবে।

সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল, আল জাজিরা এবং অন্যান্য

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877